.
“কুমারপাত্রা” আরেক নদী ম্যাকলাসকিগঞ্জের। এখানকার ভূমিরূপ অনেকটা মার্কিনদেশের “কলোরাডোর” মত। এখানেও প্রাকৃতিক ক্ষয়ে সৃষ্টি হয়েছে অপুরূপ সব নদী-পাথরের কারুকাজ। এর পর “হেসালং” ওয়াচ টাওয়ার। এখন থেকে সমগ্র ম্যাকলাসকিগঞ্জ কে পাখির চোখে দেখা যায়। ম্যাকলাসকির যে মূল তিনটে গ্রাম বা বসতি — হেসালং , লাপড়া ও কনকা , তিনটেই দৃশ্যমান এই নজরমিনার থেকে। কাছেই “নাট্টা” পাহাড়। এখানে একটা টেকিং রুট আছে। ঢেউয়ের মত হাইওয়ে পেরিয়ে , মায়াপুরের জঙ্গল এর ভিতর দিয়ে পৌঁছানো যায় এই পাহাড়ে। যা শোনা যায় এখানকার সূর্যাস্ত অসাধারণ। আরো দূরে পালামৌ(Palamau) এর “মহুয়াটার”(Mahuadanr) এর অরণ্যের হাতছানি। ম্যাকলাসকির “দুলি” গ্রাম বিখ্যাত তার মন্দির , মসজিদ ও গুরুদুয়ারার উপস্থিতি একই স্থাপত্যের মধ্যে। ভ্রাতৃত্বের নিদর্শন হিসাবে এর উপস্থিতি আজকের ভাতরবর্ষের প্রেক্ষিতে খুবই প্রাসঙ্গিক ! এ ছাড়াও দেখতে পারেন কঙ্কনা সেন শর্মার “A death in the gunj ” এর শুটিং কোথায় কোথায় হয়েছিল , কোনখানে কলাকুশলীরা ছিলেন ইত্যাদি।বুদ্ধদেব গুহর যে বাড়ি ছিল “টপিং হাউস “, যেখানে বসে উনি লিখেছিলেন “একটু উষ্ণতার জন্য” সেটাও দেখতে পারেন। যদিও সে বাড়ি আর বুদ্ধদেব গুহর নেই।
রাত নেমে আসে ম্যাকলাসকিগঞ্জে। দূর থেকে ভেসে আসে আদিজনের সুর মূর্ছনা। রাত বারে মাদলের স্বরও চড়ে। নিভুনিভু আলোয় বাংলোগুলো কেমন যেন মায়াবী হয়ে যায়। এখানেই তো এক সময় নিপুন হাতের আলতো ছোয়ায় বেজে উঠতো পিয়ানোর সিম্ফনি। বাড়িগুলোর লনে সাহেব-মেমরা বলনাচের আসরে মাতিয়ে তুলতো এই নিঝুম গঞ্জকে। শেষ বাসটা আজও চলে গেলে সাহেব পাড়ায় নেমে আসে অপার নিস্তব্ধতা। দূরে অল্প আলোর বাসস্ট্যান্ডে একদিন “ছুটি” এসে নেমেছিল ! “ছুটি এখন পর্দা-টানা ঘরে নরম বেড-লাইটের আলোয় রুদ্রর বুকে অশেষ আশ্লেষে ঘুমিয়ে আছে ,পরম নিশ্চিন্তে ,উষ্ণতায়। ছুটি ? আমার ছুটিও কি সত্যিই সুখী হয়েছে ?” আর ঠিক তখনি Pat Glaskin এর শেষ কথাগুলো মনে পড়বে,”Show me the way to go home , I am tired , And I want to go to bed , show me the way to go home “
অপূর্ব লিখেছো শুভদা। ম্যাকলাস্কিগঞ্জের গন্ধও পেলাম যেন। এত সুন্দর ডিটেইলড ভ্রমণকাহিনী সচরাচর দেখা যায় না। তোমার লেখার ফ্লেভার অনন্য।
ধন্যবাদ জয়দীপ😊
অসাধারণ লেখা
ধন্যবাদ